হাসিনার নির্দেশে বন্ধ করা হয় ইন্টারনেট, পলকের স্বীকারোক্তি

ঢাকা অফিস-  জুলাই-আগস্টে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়েছিল বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছেন সে সময়কার আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।

তাজুল ইসলাম বলেন, গত বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থায় জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন পলক। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেন যে, ভবনে আগুন লাগার কারণে ইন্টারনেট বন্ধ হয়নি, শেখ হাসিনার নির্দেশে ইন্টারনেট বন্ধ রাখা হয়েছিল।

প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে ‘গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ’ সংঘটনের অভিযোগে গত ১৭ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল। 

এরপর গত ২৭ অক্টোবর আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১০ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক এক সচিবসহ মোট ১৪ জনকে গ্রেফতার দেখিয়ে ১৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী ১৮ নভেম্বর সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ আসামিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। একইসঙ্গে তাদের ধাপে ধাপে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।

তাজুল ইসলাম আরও বলেন, পলক নিজেই স্বীকারোক্তি দিয়েছেন, এই ইন্টারনেট তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরাসরি নির্দেশ আসার পর তথ্য প্রতিমন্ত্রী নির্দেশে আইআইজি’র (ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে) সংশ্লিষ্টদের নিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়। সেই গ্রুপে নির্দেশনা দেওয়া হয়, ‘ইমিডিয়েটলি ইন্টারনেট শাটডাউন করো’ এবং তাদের এটাও নিশ্চিত করতে বলা হয়, ‘করার পর জানাও যে, ইট ইজ ডান’।

চিফ প্রসিকিউটর বলেন, এই তথ্যগুলো আমরা বিভিন্ন সোর্স থেকে পেয়েছি, সেগুলো যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সেই সংশ্লিষ্ট আসামিকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তিনি এটা সত্যায়ন করেছেন।

ইন্টারনেট বন্ধ করে গত জুলাই-আগস্টে সংঘটিত গণহত্যা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেন চিফ প্রসিকিউটর। তিনি আরও বলেন, আন্দোলনের সময় গণহত্যার তথ্য বিশ্বের কাছ থেকে আড়াল করতে ইন্টারনেট বন্ধ করা হয়।

গণঅভুত্থানের ইন্টারনেট বন্ধের বিষয়ে জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক বলেছিলেন, ডেটা সেন্টারে আগুন, সাবমেরিন কেবলের তার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়। তার এসব তথ্যও অসত্য ছিলো বলে জানান প্রসিকিউটর তাজুল ইসলাম।

Share this content:

Post Comment

অন্যান্য