সশস্ত্র বাহিনী দিবসে শিখা অনির্বাণে প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা
- এক যুগ পর সেনাকুঞ্জে বেগম খালেদা জিয়া।
- অধ্যাপক ইউনূসের সাথে করলেন কুশল বিনিময়।
লণ্ডন, ২১ নভেম্বর- ঢাকা সেনানিবাসের শিখা অনির্বাণে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) সকালে তিনি এই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকারকারী সশস্ত্র বাহিনীর শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন।
প্রধান উপদেষ্টা সকাল সোয়া ৮টার দিকে শিখা অনির্বাণে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এ সময় তাঁকে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর একটি দল গার্ড অব অনার দেয়। প্রধান উপদেষ্টার শ্রদ্ধা নিবেদনের পর রাষ্ট্রপতি, সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর প্রধান শ্রদ্ধা জানান। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে দেশের সব সেনানিবাস, নৌঘাঁটি এবং বিমানবাহিনী ঘাঁটির মসজিদে দেশের কল্যাণ কামনা করে ফজরের নামাজ শেষে বিশেষ মোনাজাত হয়েছে।
এক যুগ পর সেনাকুঞ্জে বেগম খালেদা জিয়া
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে ঢাকা সেনানীবাসের সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। দীর্ঘ এক যুগ পর সেনাকুঞ্জের অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। ২০১০ সালের ১৩ নভেম্বর খালেদা জিয়াকে তার পরিবারের দীর্ঘ ৪০ বছরের স্মৃতি বিজড়িত ঢাকা সেনানিবাসের শহীদ মইনুল রোডের বাড়ি থেকে এক কাপড়ে টেনে হিঁচড়ে জবরদস্তি করে বের করে দেয়া হয়েছিল। সেই সেনানীবাসের সেনাকুঞ্জে এক যুগ পর আমন্ত্রিত হলেন খালেদা জিয়া। সর্বশেষ ২০১২ সালে সশস্ত্র বাহিনীর অনুষ্ঠানে তিনি যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ২০১৮ সালের পর এই প্রথম প্রকাশ্যে কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নিলেন তিনি।
বৃহস্পতিবার বেলা ৩টা ৩৫ মিনিটে তিনি ঢাকা সেনানিবাসের সেনাকুঞ্জে পৌঁছান। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানিয়েছে, খালেদা জিয়া সেনাকুঞ্জে পৌঁছালে সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান এবং বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন তাঁকে অভ্যর্থনা জানান। এর আগে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে খালেদা জিয়া গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’ থেকে সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের উদ্দেশে রওনা হন। ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলা রহমান তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
অধ্যাপক ইউনূসের সাথে করলেন কুশল বিনিময়
প্রধান উপদেষ্টার দেয়া বৈকালিক এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিথিদের জন্য নির্ধারিত আসনে বসেন বিএনপি চেয়ারপারসন। তার পাশেই বসেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। অতিথিদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় শেষে প্রধান উপদেষ্টা তার আসনে বসে বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। এসময় হাস্যোজ্জ্বল খালেদা জিয়াকে কথা বলতে দেখা যায়। সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে সেনাকুঞ্জে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান জানান, খালেদা জিয়া সেনাকুঞ্জে পৌঁছে তাঁর আসনে বসার পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাঁর সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন। আগেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে পৌঁছান বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। খালেদা জিয়াকে অনুষ্ঠানে দেখে তিনি কেঁদে ফেলেন।
এবার সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ দলটির ২৬ নেতাকে সেনাকুঞ্জে আমন্ত্রণপত্র জানানো হয়। সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে বিএনপি নেতা খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান ও অন্যান্য স্থায়ী কমিটির সদস্যরাসহ বিভিন্ন দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সেনাকুঞ্জে খালেদা জিয়া, আসিফ মাহমুদের ফেসবুক পোস্ট
সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উপস্থিত হওয়ার সুযোগ করে দিতে পেরে আমরা গর্বিত বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। সেনাকুঞ্জের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে শেষে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডিতে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
এদিন সন্ধ্যায় ফেসবুকে খালেদা জিয়ার সঙ্গে নিজের কয়েকটি ছবি পোস্ট করেন আসিফ মাহমুদ। ছবিতে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম ও উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামকেও দেখা গেছে। ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘আপনাকে এই সুযোগ করে দিতে পেরে আমরা গর্বিত। সশস্ত্র বাহিনী দিবস ২০২৪।’
Share this content:
Post Comment