প্রতিমা নিরঞ্জনে কাছাকাছি দুই বাংলা, শঙ্খধ্বনিতে মুখরিত করিমগঞ্জের সীমান্ত নদী কুশিয়ারার এপার-ওপার
করিমগঞ্জ (অসম), ১৪ অক্টোবর: করিমগঞ্জে উমার বিদায়বেলায় কাছাকাছি দুই বাংলার হৃদয়। ঢাকঢোল, কাঁসর, করতাল, মন্দিরা, বাঁশি, উলু ও শঙ্খধ্বনিতে মুখরিত সীমান্ত নদী কুশিয়ারার এপার-ওপার। প্রতি বছর ভারত-বাংলাদেশ, দুই দেশেরই প্রতিমা নিরঞ্জন হয় কুশিয়ারায়। এপারে করিমগঞ্জ শহর এবং ওপারে বাংলাদেশের জকিগঞ্জ। আর এই দৃশ্যের সাক্ষী হতে ভিড় করেন অসংখ্য দর্শনার্থীরা। ব্যতিক্রম হয়নি এ বছরও।
দুর্গোৎসব নির্বিঘ্নে ও শান্তিতে সম্পন্ন হয়েছে প্রান্তিক জেলা করিমগঞ্জে। দুঃখ-কষ্ট সহ শত অভাব-অভিযোগ এক পাশে রেখে আনন্দময়ীর মর্ত্যে আগমন উপলক্ষ্যে আনন্দে মেতে ওঠেন উৎসবপ্রেমী প্রতিটি বাঙালি হিন্দু। বাঁধভাঙা আনন্দ ও উচ্ছ্বাসে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন সমগ্র জেলার উৎসবপ্রেমী হিন্দু। ষষ্ঠী থেকে নবমী, জেলা সদরের বিগ বাজেটের পূজা দেখতে গ্রামাঞ্চলের জনগণের ঢল নামে শহরে। তবে কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
ধর্মপ্রাণ বাঙালি হিন্দুরা গ্রাম থেকে শহর, সর্বত্র বৃষ্টির ভ্রুকূটি উপেক্ষা করেও আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন। দশমীর দিন জেলার প্রতিটি পুজো মণ্ডপে মহিলাদের সিঁদুর খেলার মাধ্যমে জেলার সবর্ত্রই প্রতিমা নিরঞ্জন পর্ব শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা সংঘটিত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি।
করিমগঞ্জ জেলার মফসসল থেকে গ্ৰামাঞ্চলের প্রতিটি সর্বজনীন তথা বারোয়ারি পূজার প্রতিমা নিরঞ্জন পর্বও শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয়েছে। শহরের বিগ বাজেটের পূজা কমিটিগুলো তাঁদের পূজিতা প্রতিমা নিরঞ্জন প্রথম দিন করেনি।
প্রতিমা নিরঞ্জন পর্বে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জেলার প্রতিটি বিসর্জনঘাটে দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী, অগ্নিনির্বাপক বাহিনী ও স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে জড়িত সব ধরনের জরুরিকালীন পরিষেবা প্রস্তুত রেখেছিল।
এদিকে করিমগঞ্জের ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কুশিয়ারা নদীতে এপারের বিসর্জনঘাটে এবং ওপারের জকিগঞ্জ এলাকার বিসর্জনঘাটে একসাথে প্রতিমা নিরঞ্জন পর্ব সম্পন্ন হয়েছে। এতে এপার-ওপার মিলে একাকার হয়ে গছে। দুই দেশের সীমান্ত রেখা কুশিয়ারা নদীর উভয় তীরে দেবী দুর্গার প্রতিমা নিরঞ্জন পর্ব এক উন্মাদনার সৃষ্টি করে। প্রতি বছরই উভয় দেশের বাঙালি হিন্দুরা বিজয়া দশমীর দিন এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে থাকেন। বাদ যায়নি এবারও।
করিমগঞ্জের বিসর্জনঘাটে পুরসভার পক্ষ থেকে প্রতিমা নিরঞ্জনের মুহূর্তকে আরও আকর্ষণীয় ও বর্ণময় করে তুলতে পর্যাপ্ত আলো সহ বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। বিজয়া দশমীর পুণ্যলগ্নে কালীবাড়ি রোডের বিসর্জনঘাটে সকলের উপস্থিতি এবং সক্রিয় অংশগ্রহণ কামনা করেছিলেন পুরপতি রবীন্দ্রচন্দ্র দেব। প্রতিমা নিরঞ্জনে ছিলেন করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থও।
Share this content:
Post Comment