এইচএসসির বাকি পরীক্ষা বাতিল
- প্রাথমিকে বদলে গেল ‘শপথ বাক্য’
ঢাকা, ২০ আগস্ট- শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে চলমান এইচএসসি ও সমমানের বাকি বিষয়গুলোর পরীক্ষা বাতিল করে অটোপাসের দাবি মেনে নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
মঙ্গলবার বিকেলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আব্দুর রশিদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। অবশ্য এ বিষয়ে এখনো প্রজ্ঞাপন জারি করেনি মন্ত্রণালয়।
এদিন পরীক্ষার বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদের সভাপতিত্বে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের বাকি বিষয়গুলোর পরীক্ষা অর্ধেক প্রশ্নোত্তরে অনুষ্ঠিত হবে। পুনরায় পরীক্ষা শুরুর তারিখ ১১ সেপ্টেম্বর থেকে আরও দুই সপ্তাহ পেছাবে।
তবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বাকি বিষয়গুলোর পরীক্ষা বাতিল করে অটোপাসের দাবি মেনে নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এর আগে, পরীক্ষা বাতিলের এক দফা দাবিতে বিকেলে সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভেতরে ঢুকে পড়েন শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা ‘আমাদের দাবি একটাই-পরীক্ষা বাতিল চাই’, ‘দাবি মোদের একটাই-পরীক্ষা বাতিল চাই’, ‘আপস না সংগ্রাম-সংগ্রাম-সংগ্রাম’, ‘পরীক্ষা না বিকল্প, বিকল্প-বিকল্প’, ‘যুক্তি দিয়ে আন্দোলন-বন্ধ করা যাবে না’, ‘চলছে লড়াই-চলবে’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
সকাল থেকে সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সামনে জড়ো হন পরীক্ষার্থীরা। দাবি আদায়ে দুপুরের দিকে তারা সচিবালয়ে ঢুকে পড়েন।
পরে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দশ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষা উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান এবং আলোচনার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রবেশ করেন। সে সময় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধানের আশ্বাস দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
প্রাথমিকে বদলে গেল ‘শপথ বাক্য’
দেশের সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শপথ বাক্যে পরিবর্তন আনা হয়েছে। সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এবং পিটিআইয়ে প্রতিদিনের সমাবেশে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর নতুন শপথবাক্য পাঠের আদেশ জারি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) প্রাথমিক শিক্ষ অধিদপ্তরের এক আদেশে এ তথ্য জানা গেছে। আদেশে বলা হয়, দেশের সকল সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং পিটিআই-এর প্রাত্যহিক সমাবেশকালে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের পর সরকার নিম্নোক্ত শপথ বাক্য পাঠের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
নতুন শপথ বাক্য হলো- আমি শপথ করিতেছি, মানুষের সেবায় সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রাখিব। দেশের প্রতি অনুগত থাকিব। দেশের একতা ও সংহতি বজায় রাখিবার জন্য সর্বদা সচেষ্ট থাকিব। হে মহান আল্লাহ/মহান সৃষ্টিকর্তা, আমাকে শক্তি দিন, আমি যেন বাংলাদেশের সেবা করিতে পারি এবং বাংলাদেশকে একটি শক্তিশালী ও আদর্শ রাষ্ট্র হিসেবে গড়িয়া তুলিতে পারি। আমিন।
উল্লেখ, পূর্বের শপথ বাক্যটি- ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে পাকিস্তানি শাসকদের শোষণ ও বঞ্চনার বিরুদ্ধে এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করেছে। বিশ্বের বুকে বাঙালি জাতি প্রতিষ্ঠা করেছে তার স্বতন্ত্র জাতিসত্তা। আমি দৃপ্তকণ্ঠে শপথ করছি, শহিদদের রক্ত বৃথা যেতে দেব না। দেশকে ভালোবাসব, দেশের মানুষের সার্বিক কল্যাণে সর্বশক্তি নিয়োগ করব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের আদর্শে উন্নত, সমৃদ্ধ ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার সোনার বাংলা গড়ে তুলব। মহান সৃষ্টিকর্তা আমাকে শক্তি দিন।’
Share this content:
Post Comment