১০ বছরে বিএসএফের গুলিতে ৩০৫ বাংলাদেশি নিহত

  • আহত হয়েছেন অন্তত ২৮২ জন।

লন্ডন, ১১ মার্চ: ইন্ডিয়ান সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে গত ১০ বছরে সীমান্তে কমপক্ষে ৩০৫ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২৮২ জন।

সোমবার (১০ মার্চ) মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটি (এইচআরএসএস) তথ্য তুলে ধরে বলেছে, এ চিত্র সীমান্তের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি নাজুক পরিস্থিতি নির্দেশ করে। ভারতের বারবার প্রতিশ্রুতি এবং কূটনৈতিক প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এমন ঘটনা বছরের পর বছর ধরে ঘটে চলছে।

বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ এবং এইচআরএসএসের সংগৃহীত তথ্য মিলিয়ে ২০১৫ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত সময়ে সীমান্তে হতাহতের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। এইচআরএসএস জানিয়েছে, সীমান্তে ২০২৪ সালে ৫৭টি ঘটনায় বিএসএফের হাতে ২৬  বাংলাদেশি নিহত ও ২৫ জন আহত হয়েছেন। এ ছাড়া ১৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করে বিএসএফ। একই সময়ে সীমান্তে ৯ জন বাংলাদেশির লাশ পাওয়া যায়, যাঁরা ভারতের নাগরিক ও খাসিয়াদের হামলায় নিহত হন বলে অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে ৮ মার্চ পর্যন্ত সীমান্তে ১৫টি ঘটনায় বিএসএফের হাতে ৪ বাংলাদেশি নিহত ও ১০ জন আহত হয়েছেন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৫ জনকে। এ সময়ে সীমান্তে ভারতের নাগরিক ও খাসিয়াদের হামলায় ৩ জন বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন।

এইচআরএসএস সীমান্তে সব হত্যার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছে। মানবাধিকার সংগঠনটি বলছে, সীমান্ত হত্যা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের অন্যতম স্পর্শকাতর বিষয়। দুই দেশের সীমান্তে প্রায়ই বাংলাদেশি হত্যার ঘটনা ঘটে। উভয় সরকারই সীমান্তে বেসামরিক জীবন রক্ষায় অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলে আসছে। বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে সীমান্তে হত্যাকাণ্ড শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হলেও এ ধরনের ঘটনা প্রতিনিয়ত ঘটছে।

এইচআরএসএসের তথ্য অনুযায়ী, সীমান্তে গত ১০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি হত্যাকাণ্ড ঘটে ২০২০ সালে। ওই বছর ৫১ বাংলাদেশি নিহত হন। আহত হন ২৫ জন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নিহত হন ২০১৫ সালে। ওই বছর ৪৩ জন বাংলাদেশি নিহত হন। আহত হন ৫৪ জন। ২০১৯ সালে তৃতীয় সর্বোচ্চ ৪২ বাংলাদেশি নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে। একই বছর আহত হন ২৫ বাংলাদেশি। এ ছাড়া ২০২৪ সালে ২৬ বাংলাদেশি নিহত ও ২৫ জন আহত হন। ২০২৩ সালে নিহত হন ৩০ জন ও আহত হন ৩১ জন; ২০২২ সালে নিহত ২৩ জন ও আহত ৩১ জন; ২০২১ সালে নিহত ১৭ জন ও আহত ১৪ জন; ২০১৮ সালে নিহত হন ১৫ জন ও আহত হন ১২ জন; ২০১৭ সালে নিহত হন ৩০ জন ও আহত হন ৩৭ জন এবং ২০১৬ সালে ২৮ বাংলাদেশি নিহত হন, আহত হন ২৮ জন।

এইচআরএসএসের নির্বাহী পরিচালক ইজাজুল ইসলাম বলেন, সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে। সব হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে। প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে হবে। তিনি সীমান্ত এলাকায় সব সীমান্ত ব্যবস্থাপনা কার্যক্রমে মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইনের নীতিগুলোকে মেনে চলার আহ্বান জানান।

Share this content:

Post Comment

অন্যান্য